সকল বিষয়ে পাণ্ডিত্য প্রদর্শনকারী ব্যক্তি ভুল মূল্যায়নকারীর দ্বারা সবসময় প্রশংসিত হয়ে থাকে। আর প্রকৃত পণ্ডিত ব্যক্তি তাঁর অযথা পাণ্ডিত্য প্রদর্শনের স্বভাবের অনুপস্থিতির কারণে শুধু উপেক্ষিতই হয়না, উল্টে ওইসব ভুল মানুষদের দ্বারা অপমানিত ও হয়ে থাকে।
উদাহরণঃ ধরো তুমি কোনো একদিন তোমার বন্ধুদের দলে অবস্থান করছো যার মধ্যে একজন হল সকল বিষয়ে পাণ্ডিত্য প্রদর্শনকারী। এখন যদি ওই ভূয়ো পন্ডিতের তোমার থেকে কোনো তথ্য নেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে সে তার পান্ডিত্যের অভাব গোপন করার জন্য তোমাকে নিয়ে দল থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে নিচু স্বরে তথ্য সম্পর্কিত প্রশ্ন তোমার সামনে পেশ করবে যা অন্য সকলের শ্রবণাতীত। আর তুমি খুবই স্বাভাবিকভাবে তথ্যটি তাকে দিয়ে দেবে।
পরবর্তীতে অন্য কোনোদিন ওই একই দলে অবস্থানরত অবস্থায় তোমার অন্য কোনো বন্ধুর ওই একই বিষয়ে তথ্যের প্রয়োজন হলে সে সরাসরি ওই ভূয়ো পান্ডিত্যের অধিকারীর সাহায্য চাইবে (যেহেতু সে পূর্বেই তার অত্যধিক পান্ডিত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে বন্ধুমহলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে), আর ওই ভূয়ো পন্ডিত তথ্যটিকে অতিরঞ্জিত করে, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জানে এইরূপ ভাব দেখিয়ে এবং তার তথ্য সংগ্রহের উৎস স্থল যে তুমি, এই সত্যটিকে অগ্রাহ্য করে উপস্থাপন করবে। এক্ষেত্রে তুমি অবিহেলিত হলে। এই পর্যন্ত কোনো সমস্যার উৎপত্তি না হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু সমস্যা বা আক্ষেপ বা ক্রোধের উতপত্তি তখনই হয় যখন ওই দলের অন্য কোনো ব্যক্তি বা সরাসরি তথ্য অন্বেষণকারীই ওই ভূয়ো পন্ডিতের প্রশংসাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে তার সঙ্গে তোমার তুলনা টেনে এনে তথ্যের ব্যাপারে তুমি অবগত নও, এরকম ভুল তকমা লাগিয়ে তোমাকে দোষারোপ করে বা বিদ্রূপ করে বা তোমার সম্মানহানি করে।
এই ঘটনায় তোমার ভূয়ো পন্ডিত বন্ধুর থেকেও প্রকৃত মানুষ চেনার ক্ষেত্রে ভুল ধারণার বশবর্তী বন্ধুই অনেক বেশি হানিকারক।
আমার আবেদনঃ এইরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে কিছু না বলে নীরব থাকাটাই শ্রেয়। আর, একটা কথা মনে রাখা উচিত, “জ্ঞান যত্রতত্র প্রদর্শনের বিষয় নয়, আর যত্রতত্র প্রদর্শিত সকল বিবরণই জ্ঞানের পরিচায়ক নয়।“
